প্রাচীনকাল থেকই শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে পুরস্কার ও শাস্তি প্রয়োগ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।শিক্ষাদানের পদ্ধতি যখন পরোক্ষ ও অনিয়ন্ত্রিত ছিল তখনো এ প্রথার অস্তিত্ব ছিল। শিক্ষাদান পদ্ধতি যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত রূপ নিল তখন দেখা গেল এ প্রথার গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে।
শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোযোগী মনোযোগী করার জন্য,শিক্ষক ও পরিচালকমন্ডলীর প্রতি আনুগত্য আনার জন্য ক্রমে শাস্তিদান ও পুরস্কার প্রদান অপরিহার্য হয়ে পড়ল। যে সকল শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে ভালোভাবে পাঠ গ্রহণ করে,যারা বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা মেনে চলে এবং শিক্ষকের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে তাদের পুরস্কার দেয়ার প্রথা প্রবর্তিত হয়। আর যারা করে না,তাদের জন্য শাস্তি নির্ধারিত হলো। শিক্ষাক্ষেত্রে পুরস্কার ও শাস্তিদানের রীতি আধুনিক মনোবিজ্ঞানের তত্ত্ব থেকেও সমর্থন পায়। বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী থর্নডাইক তাঁর ফললাভের সূত্রে বলেছেন,কাজের ফল যদি ভাল হয় তবে সে কাজের প্রভাব চিরস্থায়ী হয়। আবার কাজের ফল যদি বিরক্তিকর হয়,তা হলে তার প্রভাব ব্যক্তির ওপর থাকে না।
শিশু যখন কোন অন্যায় কাজ করে বা পাঠ অনুশীলন ঠিকমত না করে,তখন যদি শাস্তি দেয়া হয়,তার ফলে তার মনে যে বিরক্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয় তা ঐ আচরণের পুনরাবৃত্তিকে বাধা দেয়। আবার যখন সে কোন ভাল কাজ করে পাঠে মনোযোগী হয়,তখন তাকে পুরস্কার দেয়া হয়, তখন এ কাজের প্রতি তার আকর্ষণ বাড়ে। সুতরাং বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এবং অন্যান্য কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য শাস্তি ও পুরস্কার উভয়েরই প্রয়োজনীয়তা আছে।