১০১ : শিক্ষককেন্দ্রিক ও শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষণ পদ্ধতি - Jonakiict

Video of the day

test banner

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Tuesday, 3 March 2015

১০১ : শিক্ষককেন্দ্রিক ও শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষণ পদ্ধতি

শিক্ষার উপাদানগুলোর মধ্যে শিক্ষক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। একজন আদর্শ শিক্ষক তার সব রকম অসুবিধার মধ্যেও শিক্ষার কাজ এমন সুচারুরূপে পরিচালনা করেন যে,তাতে সম্পূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে একটা সার্থকতা আসে। আবার সব রকম উপাদান বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র শিক্ষকের অযোগ্যতার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে।
শিক্ষককেন্দ্রিক শিক্ষা পদ্ধতি: শিক্ষককেন্দ্রিক শিক্ষা পদ্ধতি প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। প্রাচীন শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষকের স্থান ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ছিলেন শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। তখন শিক্ষাকে দ্বিমুখী প্রক্রিয়া হিসাবে বিবেচনা করা হতো । এর একপ্রান্তে থাকতেন শিক্ষক এবং অন্য প্রান্তে শিক্ষার্থী। জ্ঞান বা বিষয়বস্তু ছিল তাদের মধ্যে সংযোগের মাধ্যমে অর্থাৎ জ্ঞান শিক্ষকের দিক থেকে শিক্ষর্থীদের প্রতি প্রবাহিত হতো। এ পদ্ধতি ছিল জগ ও মগ পদ্ধতির মত। অর্থাৎ শিক্ষক জ্ঞানভর্তি জড় আর শিক্ষার্থীরা শূণ্য মগ। শিক্ষক জড় থেকে মগে জ্ঞান বিতরণ করে মগ ভরে দিতেন। এ ধরণের পদ্ধতিতে শিক্ষক ছিলেন সক্রিয় আর শিক্ষার্থী নিষ্ক্রিয় উপাদান মাত্র। শিক্ষক ছিলেন জ্ঞানের আধার,আর সেই আধার থেকে তিনি জ্ঞান বিতরণ করতেন। শিক্ষক যা বলবেন শিক্ষার্থী কোন রকম বিচার বিশ্লেষণ ছাড়াই তা গ্রহণ করবে। শিক্ষর্থীর গ্রহণ ক্ষমতা কতটুকু,শিক্ষার্থীর চাহিদা কি,সে কি শিখতে চায় শিক্ষকেকে এ বিষয় নিয়ে ভাবতে হতো না। তিনি পূর্ব পরিকল্পিত গতানুগতিক রীতিতে শিক্ষার্থীর জীবন ধারণের জন্য যে সব জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা অপরিহার্য মনে করতেন,তাই তাকে বিতরণ করতেন। শিক্ষকের উদ্দেশ্য ছিল আদর্শ জীবন গঠনে শিক্ষার্থীকে সাহায্য করা। শিক্ষার্থীর জীবনকে গড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি,করার দায়িত্ব ছিল শিক্ষকের উপর। শিক্ষা ক্ষেত্রে পাঠদানের জন্য বক্তৃতা পদ্ধতি হচ্ছে জগ ও মগ,পদ্ধতির নামান্তর।
শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষা পদ্ধতি: শিক্ষার তাৎপর্য,শিক্ষাদান পদ্ধতি আধুনিককালে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গতানুগতিক রীতিতে শিক্ষকের যে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে আদান-প্রদান বা দাতা-গ্রহীতার সম্পর্কের যে কথা বলা হয়েছিল তা আধুনিক পদ্ধতিতে ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করা হয়েছে। সুতরাং আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকের স্থান পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষার তাৎপর্যের সাথে সমতা রেখে।
শিক্ষাবিদরা আধুনিক শিক্ষাকে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষার যুগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক কথার তাৎপর্যই সহজে প্রকাশ করে আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষকের অবস্থান কোথায়। শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো শিক্ষার্থী-শিক্ষক নয়,পাঠ্যক্রমও নয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর চাহিদা,অনুরাগ,ক্ষমতা ইত্যাদি প্রধান। সে তার নিজস্ব মানসিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জ্ঞান আহরণ করবে। শিক্ষকের কাজ হবে তাকে সহায়তা করা। সুতরাং শিক্ষক এমন পিছনে,তিনি শিক্ষার্থীর উপর জোর করে তার নিজের ব্যক্তিত্বের প্রভাব চাপিয়ে দেবেন না। তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে থাকবেন শিক্ষার্থীর পাশে তার সহায়ক হিসেবে। শিক্ষক শিক্ষার্থীর সাথে মিত্রতার সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। তিনি সব সময় শিক্ষার্থীর পাশে বন্ধুর মত থাকবেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বের,তাহলেই শিক্ষা কার্যক্রম সার্থক হবে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here