ভাষা কাকে বলে ? সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য দেখাও । - Jonakiict

Video of the day

test banner

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Thursday, 19 February 2015

ভাষা কাকে বলে ? সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য দেখাও ।

ভাষার সংজ্ঞা : সাধারণভাবে বলা যায়,মনের ভাব প্রকাশের নিমিত্তে বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত অপরের বোধগম্য ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টির নাম ভাষা। অবশ্য উপরোক্ত সংজ্ঞা শুধু বাচনিক ভাষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। দেহ ও মুখের ভঙ্গি এবং নানা রকম সংকেতের মাধ্যমে ও আমরা মনোভাব প্রকাশ করি। এ রূপ ভাষাকে বলে অবাচনিক ভাষা।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌র মতে, 'মানুষ যে সব ধ্বনি দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে তার নাম ভাষা।' 
ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ' মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনির দ্বারা নিষ্পন্ন ,কোন বিশেষ জনসমাজে ব্যবহৃত,স্বতন্ত্রভাবে অবহিত তথা বাক্যে প্রযুক্ত শব্দ সমষ্টিকে ভাষা বলে।' 
সাধু  ও চলিত রীতির পার্থক্য : প্রতিটি সমৃদ্ধ ভাষারই দুটি রূপ থাকে। সাহিত্য সৃষ্টির প্রয়োজনে এবং সার্বজনীন প্রয়োজনে বাংলা ভাষাকেও দু'টি রূপে রূপায়িত করা হয়েছে। যথা- (১) সাধু  ও (২) চলিত।
ভাষার উদ্দেশ্য এক হলেও এদের মধ্যে নিম্নলিখিত পার্থক্যগুলো পরিলক্ষিত হয়-
১. সাধুভাষা লিখিতভাবে ভাব প্রকাশের সর্বজন স্বীকৃত সাধারণ রূপ। অপর পক্ষে, দেশের শিক্ষিত জনসমাজের পারস্পরিক ভাব বিনিময় ও কথোপকথনের উপযুক্ত বাহন হলো চলিত ভাষা।
২. সাধু ভাষা ব্যাকরণের সুনির্দিষ্ট ও সুনির্ধারিত নিয়মের অনুসারী। কিন্তু চলিত ভাষা ব্যাকরণের সকল নিয়ম মেনে চলে না।
৩. সাধুভাষায় তৎসম শব্দের প্রয়োগ বেশি। অন্যদিকে,চলিত ভাষায় তদ্ভব,অর্ধতদ্ভব ও বিদেশী শব্দের প্রয়োগ বেশি।
৪. সাধু ভাষায় অপিনিহিত ও অভিশ্রুতির ব্যবহার নেই। চলিত রীতিতে এদের প্রয়োগ করা হয়।
৫. সাধু ভাষা অপরিবর্তনীয়। চলিত ভাষা পরিবর্তনীয়।
৬. সাধু ভাষা বেশ প্রাচীন। চলিত ভাষা অপেক্ষাকৃত আধুনিক।
৭.সাধুভাষায় সর্বনাম পদ পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয়। চলিত রীতিতে সর্বনামগুলো সংকুচিত রূপে ব্যবহৃত হয়। যেমন- এ, সে, এরা, তারা ইত্যাদি।
৮. সাধু ভাষায় সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়াগুলো পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয়। যেমন- করিয়াছি,খাইয়াছি,পড়িয়াছি ইত্যাদি। চলিত ভাষায় ক্রিয়াপদগুলো সংক্ষিপ্তভাবে ব্যবহৃত হয়। যেমন-করে,করেছি,পড়ে,পড়ছে ইত্যাদি।
৯. সাধভাষার পদ বিন্যাস সুনিয়ন্ত্রিত ও সুনির্ধারিত। চলিত ভাষার পদ বিন্যাস সর্বদা সুনির্ধারিত নয়।
১০. সাধু ভাষা কৃত্রিম হলেও এটা সুষমামন্ডিত,গাম্ভীর্যপূর্ন ও আভিজাত্যের অধিকারী। চলিত ভাষা অপেক্ষাকৃত জীবন্ত লঘুগতি সম্পন্ন ও গণমানুষের ভাষা।
১১. সাধু ভাষায় হইতে, থাকিয়া, দিয়া ইত্যাদি অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। চলিত রীতিতে অনুসর্গ সংকুচিত রূপে ব্যবহৃত হয়। যেমন- হয়ে,হতে,থেকে,দিয়ে ইত্যাদি।
১২. সাধু ভাষা সাধারণ কথাবার্তা,বক্তৃতা ও নাটকের সংলাপের উপযোগী নয়। চলিত ভাষা সাধারণ কথাবার্তা,বক্তৃতা,নাটকের ও সংলাপের উপযোগী।
১৩. সাধু ভাষা সাধারণ কথাবার্তার উপযোগী নয় এবং দুর্বোধ্য বলে ক্রমশ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে চলিত ভাষা নিত্য নতুন পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে ক্রমশ সমৃদ্ধ হচ্ছে।
১৪. সাধু ভাষা কোন অঞ্চল বিশেষের প্রভাবাধীন নয়। কিন্তু চলিত ভাষা আঞ্চলিক প্রভাবাধীন।
১৫. উদাহরণ- তাহারা বিষম ব্যথিত হইল। তারা বেশ ব্যাথা পেল।







Post Top Ad

Responsive Ads Here