শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় কিছু অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি হতে পারে,যা সুষ্ঠু পাঠদানের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য শিক্ষক যে সকল প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তাকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তাকেই প্রতিরোধমূলক শ্রেণি ব্যবস্থাপনা বলা হয়। যে সকল কৌশল অবলম্বন করতে হবে তা নিম্নে তুলে ধরা হলো-
- শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ: কোন কোন শিক্ষার্থী পাঠদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে পারে এবং আসন গ্রহণের বিষয় নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। এতে পাঠদান বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। শিক্ষক দক্ষতার সাথে এ বিষয়টির সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
- শিক্ষার্থীর আসন বিন্যাস: শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আসন বিন্যাসের বিষয়টি শিক্ষক পাঠদান শুরু করার পূর্বে সম্পন্ন করবেন। এক্ষেত্রে শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের উচ্চতা,বয়স এবং কম ও বেশি মেধা বিবেচনায় রেখে আসনবিন্যাস করতে হবে।
- মনোযোগ আকর্ষণ: শ্রেণিকক্ষে মূল বিষয় পাঠদানের পূর্বে শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষার্থীর মনোযোগ আকর্ষণের জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করবেন। প্রথমে শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করবেন এবং পূর্বদিনের পাঠ থেকে কিছু প্রশ্ন করতে পারেন তাতে শিক্ষার্থীরা বিশৃঙ্খলা পরিহার করে পাঠের প্রতি মনোযোগী হবে।
- শিক্ষার্থীর হাজিরা গ্রহণ: শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের হাজিরা গ্রহণ কার্যক্রম শ্রেণিকক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। সুতরাং পাঠের পূর্বে হাজিরা গ্রহণ করা শ্রেণি ব্যবস্থাপনার একটি কৌশল হতে পারে।
- পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ: বক্তৃতা পদ্ধতিতে পাঠদান করলে শ্রেণিকক্ষে কিছুটা বিশৃংখল অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এক্ষেত্রে সকল শিক্ষার্থী শিক্ষকের বক্তৃতার প্রতি মনোযোগ নাও দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সকল শিক্ষার্থীর মনোযোগ পাঠের প্রতি আকর্ষণের জন্য শ্রেণিতে পাঠ সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন করবেন। এতে শিক্ষার্থীরা সচেতন হবে এবং শ্রেণি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- শ্রেণিতে কাজ অর্পণ এবং গ্রহণ: শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের কর্মব্যস্ত রাখার জন্য এবং পাঠে অংশগ্রহণের জন্য তাদেরকে দলে বিভক্ত করে কাজ দিতে হবে।এতে সকল শিক্ষার্থীর পাঠে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে এবং শিক্ষার্থীরা মনোযোগের সাথে অর্পিত কাজ সম্পন্ন করবে। পরে সকলের নিকট থেকে কাজ আদায় করতে হবে।
- শিক্ষার্থীদের কাজের প্রশংসা করা: প্রশংসা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মানসিক পুরস্কার। এ পুরস্কার প্রাপ্তির প্রত্যাশা সকলের মধ্যেই থাকে। সুতরাং শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের কাজের প্রশংসা করতে হবে। এতে শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীরা অনুরক্ত হবে এবং আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে বিশৃঙ্খল মনোভাব পরিহার করবে।
সুতরাং শিক্ষককে অবাঞ্ছিত বিষয়গুলি পরিহারের জন্য উপরোক্ত বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে। বিশেষ করে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে অনেক অবাঞ্ছিত বিষয়ের উদ্ভব হতে পারে। যেহেতু তারা অভিজ্ঞ এবং দক্ষ শিক্ষক নন। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের বিচক্ষণতা ও কৌশলের সাথে এ সকল মোকাবেলা করে সুষ্ঠু শ্রেণি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। কারণ,আনুষ্ঠানিক পাঠদান পরিচালনার ক্ষেত্রে শ্রেণিকক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম।